তপ্ত দুপুর। ফুটিফাটা মরুপ্রান্তর-সদৃশ গ্রাম। ধুধু করছে দিক-বিদিক। তীব্র জলসংকট।
"এক ফোঁটা জ...ল !!"
ধ্বংসস্তূপের তল থেকে ভেসে আসছে এক করুণ আকুতি। যদিও এই পরিত্রাহি অস্ফুটস্বর শোনার কেউ নেই।
এক ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা চাপা পড়েছে আজ ছয়দিন হল। একবিন্দু জলের জন্যে কাতরাচ্ছে। ভগ্নাবশেষ-এর তলায় আবর্জনা খেয়ে কোনোক্রমে বেঁচে।এখন একটু জল চাই।
রাক্ষুসে দেশগুলি এই দেশের মানচিত্রটিকে চিবিয়ে খেতে চায়। পরপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দেশটি আজ ক্ষতবিক্ষত।
তবে এইসব এখানে নতুন কিছু নয়। জীবন তো আর থেমে থাকে না। সামনেই ফুলবল খেলছিল কচিকাঁচার দল। এক সময় বলটি ধ্বংসস্তূপের কাছে এসে থামল। ছোট্ট আবদুল্লা বল আনতে গিয়ে সেই করুণ আর্তি শুনতে পেল।
উদ্ধারের পর সঙ্গে সঙ্গে জলভর্তি একটি গ্লাস এগিয়ে এলো। গ্লাসটি শক্ত করে ধরতে চাইলেন বৃদ্ধা ; এতই ক্ষিপ্রতার সাথে যে গ্লাস থেকে অনেকটা জল বাইরে ছিটকে পড়ল। জলের স্বাদ যে কত মধুর হয়, মুমূর্ষু বৃদ্ধা এই প্রথম ভাল করে উপলব্ধি করলেন।
স্বর্গের দেবতারা কেন-যে অমৃতলাভের জন্যে সমুদ্র-মন্থন করেন,সে এক আশ্চর্য ব্যাপার।
"জলের থেকে অমৃতময় আর কিছু হতে পারে না", -ছোট্ট নাতি আমীর-কে কোলে নিয়ে বলছিলেন দাদু আব্দুল্লাহ। সেদিনের সেই ছোট্ট আবদুল্লাই আজ ডঃ আবদুল্লা হামিদ। আজ তিনি শহরের এক প্রখ্যাত চিকিৎসক।
হঠাৎ আমীর দাদুর কোল থেকে নেমে পড়ল। দৌঁড়ে গিয়ে বাথরুমের টপ-টপ করে চুঁইয়ে পড়তে থাকা জলের কল-টি বন্ধ করে দিয়ে আসল।
নাতির এই কাজ দেখে একফোঁটা আনন্দাশ্রু গাল গড়িয়ে নেমে পড়ছে দাদুর। ছোট্ট আমীর দাদুর চোখের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে.... ।
Comments
Post a Comment